সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

https://dmmsoftware.top/

Please visit : https://dmmsoftware.top/ 

নিঃসঙ্গ হৃদয়ের প্রেম: এক অজানা সম্পর্কের গল্প

 নিঃসঙ্গ হৃদয়ের প্রেম: এক অজানা সম্পর্কের গল্প

পর্ব ১: একাকীত্বের মাঝে আলোর ঝলক

রাত তখন প্রায় ১১টা। ঢাকা শহরের ব্যস্ততা কমে গেছে, রাস্তাগুলো অনেকটা ফাঁকা। আবির তার ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে ছিল, এক কাপ কফি হাতে নিয়ে। মন খারাপ হলে ওর এই অভ্যাস—নিঃশব্দে রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকা।

হঠাৎ ফোনটা বেজে উঠল। অপরিচিত নম্বর। একটু দ্বিধার পর সে কলটা রিসিভ করল।

“হ্যালো?”

ওপাশ থেকে একটা নারীকণ্ঠ শোনা গেল, “হ্যালো… আমি মেঘলা বলছি। ভুল নাম্বারে কল চলে এসেছে মনে হচ্ছে।”

আবির কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, “হতে পারে। তবে এখন রাত অনেক। আপনি কি ঠিক আছেন?”

মেয়েটি হাসল, “আপনাকে কি পরিচিত মনে হচ্ছে না? আমি আপনাকে আগেও ফোন করেছিলাম।”

আবির ভ্রু কুঁচকে বলল, “আমি ঠিক বুঝতে পারছি না।”

মেঘলা মৃদু হেসে বলল, “একদিন বুঝতে পারবেন।”

পর্ব ২: অজানা অনুভূতি

এভাবে কথোপকথন শুরু হলো আবির আর মেঘলার মধ্যে। প্রতিদিন রাতে তাদের মধ্যে কথোপকথন চলতে থাকল। আবির অনুভব করল, সে ধীরে ধীরে মেঘলার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ছে। অথচ সে এখনো জানে না, মেঘলা কে, কেমন দেখতে, কী করে!

“তুমি কি সত্যিই বাস্তবে আছো?” একদিন আবির জিজ্ঞেস করল।

মেঘলা মুচকি হেসে বলল, “তুমি কি ভাবছো, আমি কেবল তোমার কল্পনার অংশ?”

আবির দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “হয়তো! কারণ এতটা সুন্দর সম্পর্ক বাস্তবে হয় না।”

পর্ব ৩: প্রথম দেখা

একদিন মেঘলা বলল, “তুমি কি আমাকে দেখতে চাও?”

আবির একটু চমকে উঠল, তারপর বলল, “হ্যাঁ।”

“তাহলে কাল সন্ধ্যায় বইমেলায় এসো।”

আবিরের বুক ধুকপুক করছিল। অবশেষে দেখা হবে! পরদিন নির্ধারিত সময়ে সে বইমেলায় গেল। কিন্তু মেঘলাকে চিনবে কীভাবে? হঠাৎ পেছন থেকে এক মিষ্টি কণ্ঠ শোনা গেল, “তুমি আবির, তাই না?”

আবির ঘুরে দেখল, এক মেয়ের হাস্যোজ্জ্বল মুখ। সে কিছু বলার আগেই মেঘলা বলল, “দেখা হয়ে গেল!”

পর্ব ৪: প্রেমের সূচনা

এরপর থেকে তাদের সম্পর্ক আরও গভীর হতে থাকল। তারা একসঙ্গে সিনেমা দেখতে যেত, শহরের নির্জন রাস্তা ধরে হাঁটত। আবির বুঝতে পারছিল, মেঘলা তার জীবনের অপরিহার্য অংশ হয়ে উঠছে।

একদিন সাহস করে বলল, “মেঘলা, আমি তোমাকে ভালোবাসি।”

মেঘলা চুপ করে থাকল। কয়েক মুহূর্ত পরে বলল, “আবির, আমি তোমাকে কিছু বলতে চাই।”

“বলো।”

“আমি তোমাকে ভালোবাসি, কিন্তু আমার জীবনটা খুবই জটিল।”

আবির অবাক হয়ে তাকাল। “মানে?”

পর্ব ৫: এক কঠিন সত্য

মেঘলা দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “আমি ক্যান্সারে আক্রান্ত। হয়তো আর বেশিদিন বাঁচব না।”

আবিরের মাথার উপর বাজ পড়ার মতো হলো। সে বিশ্বাস করতে পারছিল না।

“তুমি মজা করছো, তাই না?”

মেঘলা চোখের পানি লুকানোর চেষ্টা করল। “আমি সত্যিই তোমাকে ভালোবাসি, আবির। কিন্তু আমি চাই না আমার জন্য তুমি কষ্ট পাও।”

আবির মেঘলার হাত ধরে বলল, “ভালোবাসা কেবল সুখের নয়, দুঃখেও পাশে থাকা দরকার। আমি তোমার সঙ্গেই থাকব।”

পর্ব ৬: শেষ ভালোবাসা

পরবর্তী কয়েক মাস, আবির আর মেঘলা প্রতিটা মুহূর্ত উপভোগ করল। হাসপাতালের বিছানায় শুয়েও মেঘলা হাসতো, আবির তার পাশে বসে গল্প করত।

একদিন সন্ধ্যায় মেঘলা আবিরের হাত ধরে বলল, “যদি আমি চলে যাই, তবুও কি তুমি আমাকে মনে রাখবে?”

আবির চোখের পানি সামলে বলল, “তুমি আমার হৃদয়ে থাকবে চিরকাল।”

পর্ব ৭: চিরবিদায়

একদিন সকালে খবর এলো, মেঘলা আর নেই।

আবির নির্বাক হয়ে বসে রইল। সে কিছু বলতে পারছিল না, কিছু বুঝতে পারছিল না। কিন্তু সে জানত, মেঘলা তার হৃদয়ে বেঁচে থাকবে চিরকাল।

গভীর রাতে, সে তার পুরোনো ফোনটা হাতে নিল। মেঘলার প্রথম এসএমএসটা খুলল। সেখানে লেখা ছিল—

“ভালোবাসা মানে শুধু একসঙ্গে থাকা নয়, ভালোবাসা মানে স্মৃতির মধ্যে বেঁচে থাকা।”

(শেষ)

মন্তব্যসমূহ