বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
ভালোবাসার রঙিন শহর
গল্পের নাম: ভালোবাসার রঙিন শহর ✍️ ধরণ: প্রবাসে প্রেম, নতুন বন্ধন, পুরনো স্মৃতি
অধ্যায় ১: অচেনা শহরের জানালা
নিউ ইয়র্ক শহরের এক বরফ পড়া সকালে জানালার পাশে বসে আছে মিশু। পুরো নাম মিশকাত রহমান। বয়স ২৮, বাংলাদেশ থেকে আসা এক আর্কিটেক্ট, বর্তমানে নিউ ইয়র্কের ব্রুকলিনে থাকেন। নতুন প্রজেক্টের কাজ নিয়ে ব্যস্ত, কিন্তু আজ তার চোখ বারবার চলে যায় জানালার বাইরে... সাদা বরফে ঢাকা শহরের মাঝখানে তার মনটা খালি খালি লাগে।
এই শহরে এসেছে তিন মাস হলো। আরেকটু গুছিয়ে উঠতে পারলে মাকে নিয়ে আসবে। কিন্তু মনটা পড়ে থাকে ঢাকাতে, বিশেষ করে এক মুখের দিকে—সানজিদা।
সানজিদা রশিদ, মিশুর বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের প্রেমিকা। ইংরেজি সাহিত্যের ছাত্রী ছিল, চশমার ভেতর থেকে তার হাসি যেন মন খুঁজে নিত। কিন্তু জীবনের ব্যস্ততা আর পরিবারের চাপে সম্পর্কটা হারিয়ে গিয়েছিল।
আজ হঠাৎ ফেসবুকে তার নাম দেখে বুক ধকধক করে ওঠে। ইনবক্সে একটা মেসেজ:
"Hey Mishu, তুমি কি এখনো নিউ ইয়র্কেই আছো? আমি এসেছি... দেখা হবে?"
অধ্যায় ২: কফি শপে প্রথম সন্ধ্যা
ব্রুকলিনের এক ছোট্ট কফিশপে বসে আছে মিশু, টেবিলে দুটি কাপে ধোঁয়া উঠছে। বাইরে তুষার পড়ছে। হঠাৎ কাচের দরজাটা খুলে গেল। ঢুকলো এক চেনা হাসি—সানজিদা।
তার পরনে গাঢ় নীল ওভারকোট, চোখে চশমা, কিন্তু চেহারার উজ্জ্বলতা আগের মতোই।
"তুমি তো একটুও পাল্টাওনি," মিশু বলল হাসি চেপে।
"তুমি পাল্টে গেছো, কিন্তু ভালোভাবে," জবাব দিল সানজিদা।
দুইজনে বসে গল্প করলো ঘণ্টার পর ঘণ্টা। যেন আট বছর আগের সম্পর্ক আজও থেকে গেছে কোথাও। কিন্তু তারা জানে, সময় সব বদলে দেয়।
"তুমি কি এখনো কাউকে ভালোবাসো, মিশু?" হঠাৎ জিজ্ঞেস করল সে।
মিশু চুপ করে থাকলো কিছুক্ষণ, তারপর বললো, "তুমি যদি জানতে, আমি প্রতিদিন অপেক্ষা করতাম, শুধু একটিবার কথা বলার জন্য।"
অধ্যায় ৩: রঙিন শহরের ভিতরে
নিউ ইয়র্কের রাস্তায় হাঁটছে দুজন। রাতের আলো, চারপাশে গাড়ির হর্ণ, ঝলমলে শহরের মাঝেও মনে হয় শুধু দুজন মানুষ—তারা।
একটি গানের লাইন কানে বাজে:
"তুমি যে আমার, এ মন বলে বারবার।"
তারা সেন্ট্রাল পার্কে গিয়ে বসে। সেই চিরাচরিত বেঞ্চ, স্নোফ্লেইক পড়ছে ধীরে ধীরে।
"তুমি কি জানো, আমি তোমার জন্য এক কবিতা লিখেছিলাম?" বললো সানজিদা।
"শোনাও না," বলে মিশু।
সে ব্যাগ থেকে একটি পুরনো নোটবুক বের করলো। নীল কালিতে লেখা:
"তোমার নাম যখন জানালার কাঁচে জমে, আমি তখনও দাঁড়িয়ে থাকি ঠাণ্ডা হাওয়ার মাঝে। তুমি আসবে, জানি না, তবু অপেক্ষা করি..."
অধ্যায় ৪: অতীতের ছায়া
সানজিদা বললো, "জানো, নিউ ইয়র্কে আসার আগে অনেক কিছু ভাবিনি। হঠাৎ তোমার কথা মনে পড়লো, আর ইনবক্সে লিখে ফেললাম।"
মিশু তার দিকে তাকিয়ে বললো, "তুমি জানো না, তোমার মেসেজটা আমাকে কতোটা আলো দিয়েছে। এই শহরের ভিড়ে আমি হারিয়ে যাচ্ছিলাম।"
তারা সিদ্ধান্ত নিলো, প্রতি শুক্রবার দেখা করবে। নিউ ইয়র্ক শহরটাকে তারা নিজেদের মতো করে আবিষ্কার করবে।
কখনো তারা গিয়েছে আর্ট গ্যালারিতে, কখনো ব্রুকলিন ব্রিজে হেঁটেছে রাতভর, কখনো হারিয়ে গেছে পুরনো বইয়ের দোকানে।
অধ্যায় ৫: ভালোবাসার রঙিন শহর
ছয় মাস পেরিয়ে গেছে। এই ছয় মাসে নিউ ইয়র্ক যেন এক নতুন রূপ পেয়েছে। প্রতিটি রাস্তা, প্রতিটি বেঞ্চ, প্রতিটি কফিশপ যেন তাদের গল্প বলে।
এক সন্ধ্যায়, টাইমস স্কোয়ারে দাঁড়িয়ে মিশু বললো, "তুমি জানো, আমি মনে মনে তোমাকে অনেক আগেই বিয়ে করেছিলাম।"
সানজিদা হেসে বললো, "তাহলে এবার বাস্তবে করো না কেন?"
একটি ছোট্ট আংটি বের করলো মিশু, হাঁটু গেড়ে বললো, "Will you marry me, Sanjida?"
সানজিদা চোখের জলে ভিজে বললো, "Yes, a thousand times yes."
শেষ পর্ব: ভালোবাসার ঠিকানা
তারা এখন থাকে একসাথে, নিউ ইয়র্ক শহরের হারলেমে। একটি ছোট্ট অ্যাপার্টমেন্ট, কিন্তু ভালোবাসায় পূর্ণ।
তাদের প্রতিদিনের জীবন যেন এক নতুন গল্প—ঘুম থেকে উঠে কফির কাপ শেয়ার করা, অফিসের কাজ শেষে একসাথে রান্না করা, রাতের বেলা একসাথে জানালায় বসে চাঁদ দেখা।
মিশু এখন আর একা জানালার পাশে বসে না। তার পাশে এখন সানজিদা। সেই চেনা মুখ, সেই হারিয়ে যাওয়া ভালোবাসা—এখন তারই পাশে, তারই জীবনে।
নিউ ইয়র্ক শহরটি আর শুধু সাদা বরফে ঢাকা একটি বিদেশি শহর নয়—এখন এটি "ভালোবাসার রঙিন শহর"।
জনপ্রিয় পোস্টসমূহ
নিজের ব্লগে ই-কমার্স ফিচার যুক্ত করার উপায় (প্রোডাক্ট বিক্রি করুন সরাসরি ব্লগ থেকেই)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
Google Sites দিয়ে ফ্রি ওয়েবসাইট বানিয়ে ইনকাম করুন (Step by Step বাংলা গাইড ২০২৫)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন