সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

https://dmmsoftware.top/

Please visit : https://dmmsoftware.top/ 

সময়ের সীমানায় ভালোবাসা

সময়ের সীমানায় ভালোবাসা


পরিচয় অধ্যায়:

তানভীর একজন মেধাবী ছাত্র, পড়াশোনার পাশাপাশি প্রযুক্তি ও ইতিহাসের প্রতি তার অগাধ ভালোবাসা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরোনো লাইব্রেরিতে সময় কাটাতে তার বেশ ভালো লাগে। একদিন, পুরোনো বইয়ের তাক ঘেঁটে একটি ধুলো জমা নোটবুক খুঁজে পায় সে। এই নোটবুকটি ছিল ১৯৮০ সালের এক মেয়ের, যার নাম ছিল নীলিমা।

অতীতের বার্তা:

নোটবুকের প্রথম পাতায় লেখা ছিল: "যদি তুমি এই নোটবুক পাও, তবে জেনে রেখো, আমি তোমার জন্য অপেক্ষা করছি।"

তানভীর প্রথমে ভেবেছিল এটি কোনো উপন্যাসের অংশ, কিন্তু নোটবুকের তারিখ দেখে সে অবাক হয়ে যায়। কৌতূহলী হয়ে সে আরও পড়তে শুরু করে এবং বুঝতে পারে, এটি কোনো কল্পনা নয়—এ যেন সত্যিই অতীত থেকে আসা এক বার্তা।

সময়-ভ্রমণের সূত্র:

তানভীর যখন গভীর রাতের লাইব্রেরিতে একা ছিল, তখন হঠাৎই বাতাসে এক অদ্ভুত শিহরণ অনুভব করে। সেই নোটবুকের একটি পৃষ্ঠা আলো ছড়িয়ে পড়ে, আর কিছুক্ষণের জন্য চারপাশের পরিবেশ বদলে যায়। তানভীর আবিষ্কার করে, সে ১৯৮০ সালের ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে পড়েছে!

প্রথম সাক্ষাৎ:

সেখানে তার দেখা হয় নীলিমার সাথে। নীলিমা ছিল সে সময়ের এক বিদ্রোহী মনের মেয়ে, সমাজের রীতিনীতি উপেক্ষা করে সে নিজেকে শিক্ষিত ও স্বাধীন করতে চেয়েছিল। তানভীর অবাক হয়ে দেখে, নীলিমা যেন তাকে আগে থেকেই চিনতো।

নীলিমা বলে, "আমি জানি তুমি কে। তুমি ভবিষ্যৎ থেকে এসেছো, তাই না?"

তানভীর হতবাক! সে কীভাবে জানলো?

ভালোবাসার শুরু:

পরবর্তী কয়েকদিন তানভীর ও নীলিমার মধ্যে গভীর বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তারা একসাথে সময় কাটাতে শুরু করে। কিন্তু তানভীর জানে, তার এখানে থাকার কথা নয়, আর সময়ের নিয়ম ভাঙলে তার পরিণতি কী হতে পারে তা সে জানে না।

তানভীর বুঝতে পারে, নীলিমার প্রতি তার দুর্বলতা জন্ম নিচ্ছে, কিন্তু সে বুঝতে পারে না, তার ভবিষ্যৎ কি তাকে থাকতে দেবে? নাকি সময়ই তার ভালোবাসার সবচেয়ে বড় বাধা?


সময়ের পর্দার ওপারে:

একদিন হঠাৎ করেই নীলিমার হাতে থাকা নোটবুকের পাতা অদ্ভুতভাবে ঝলসে যেতে থাকে। তানভীর দেখতে পায়, পাতাগুলোর মাঝে নতুন কিছু লেখা ফুটে উঠছে:

"তুমি চলে যাওয়ার সময় হয়ে এসেছে... সময়ের নিয়ম ভাঙলে বিপদ ডেকে আনবে..."

তানভীর আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। নীলিমাও বিষণ্ণ হয়ে যায়। সে জানে, তাদের একসাথে থাকা সম্ভব নয়, কিন্তু হৃদয়ের টান কি সময়ের বাঁধাকে মানে?

তানভীর ও নীলিমা মিলে সমাধান খুঁজতে চেষ্টা করে। কিন্তু সময় কি তাদের সুযোগ দেবে?


ভবিষ্যতের টানাপোড়েন:

তানভীর অনুভব করে, তার শরীরে এক অদ্ভুত পরিবর্তন হচ্ছে। তার চারপাশ ধীরে ধীরে ঝাপসা হয়ে আসছে, মনে হচ্ছে সময় তাকে টেনে নিয়ে যেতে চাইছে।

নীলিমার চোখে জল জমে আসে, "তুমি কি আমার কাছে ফিরে আসবে?"

তানভীর কিছু বলতে গিয়ে দেখে, তার কণ্ঠস্বর হারিয়ে যাচ্ছে। সে নিজের কক্ষপথে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে।


বর্তমানের বাস্তবতা:

তানভীর হঠাৎ করেই লাইব্রেরির মেঝেতে পড়ে যায়। সে শ্বাস নিতে কষ্ট অনুভব করে, যেন দীর্ঘক্ষণ অন্য কোথাও ছিল।

কিন্তু তার হাতের মুঠোয় তখনো নীলিমার লেখা সেই নোটবুকের একটি ছেঁড়া পৃষ্ঠা। পৃষ্ঠার এক পাশে লেখা:

"ভালোবাসা সময়ের বাধা মানে না। অপেক্ষায় রইলাম..."

তানভীর কি আবার ফিরে যেতে পারবে? নাকি নীলিমার জন্য সময়ের সাথে লড়াই করবে?


নাটকীয় পরিণতি:

তানভীর বারবার লাইব্রেরিতে গিয়ে চেষ্টা করতে থাকে, কিন্তু সময় আর তাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় না। সে হতাশ হয়ে পড়ে, কিন্তু হাল ছাড়ে না।

হঠাৎ একদিন, এক অদ্ভুত ঘটনা ঘটে।

লাইব্রেরির পুরোনো রেকর্ড ঘাঁটতে গিয়ে সে খুঁজে পায় এক ছবি—১৯৮০ সালের একটি দলছুট ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে একজনে তার নিজের মতো দেখতে! তার পাশেই দাঁড়িয়ে আছে নীলিমা।

তানভীর চমকে ওঠে। এর মানে কি সে একবার সময়-ভ্রমণ করেই আটকে গিয়েছিল?

তারপর সে আরেকটি নোট খুঁজে পায়, যেখানে লেখা:

"তুমি ফিরে এসেছিলে, কিন্তু সময় তোমাকে আর ফিরতে দেয়নি। আমি জানতাম তুমি হারিয়ে যাবে, তাই তোমার জন্য অপেক্ষা করেছি। আমরা একসাথে এক নতুন জীবন শুরু করেছি। তবে তোমার স্মৃতিগুলো হয়তো মুছে গিয়েছিল। কিন্তু তুমি আবার খুঁজে পেয়েছো... কারণ ভালোবাসা কখনো হারিয়ে যায় না।"

তানভীরের চোখে জল চলে আসে। সে কি কখনোই নীলিমাকে খুঁজে পাবে না? নাকি সময় আবার নতুন কোনো পথ খুলে দেবে?

মন্তব্যসমূহ