সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

https://dmmsoftware.top/

Please visit : https://dmmsoftware.top/ 

ছায়ার অন্তরালে প্রেম

ছায়ার অন্তরালে প্রেম

প্রথম অধ্যায়: আগন্তুক

শহরের প্রান্তে এক পুরনো গ্রন্থাগার, যেখানে সন্ধ্যার পর খুব কম মানুষ আসে। কিন্তু প্রতিদিন, ঠিক সন্ধ্যা সাতটায়, আমেরিন পেম সেখানে হাজির হয়। তার চোখে ছিল গভীর এক শূন্যতা, ঠোঁটে এক অদ্ভুত নীরবতা।

রিফাত, এক তরুণ গোয়েন্দা, বেশ কিছুদিন ধরেই খেয়াল করছিল মেয়েটিকে। অন্ধকারের সাথে যেন এক অদ্ভুত সম্পর্ক আছে তার। কেন সে এখানে আসে? কেনই বা কেউ তার সম্পর্কে কিছু জানে না? কৌতূহল রিফাতকে ধীরে ধীরে টেনে নিয়ে যেতে লাগলো এক অদ্ভুত রহস্যের দিকে।

দ্বিতীয় অধ্যায়: ছায়ার খেলা

একদিন রিফাত সাহস করে আমেরিনের কাছে গিয়ে বসলো। "তুমি প্রতিদিন এখানে আসো, কেন?" প্রশ্ন করতেই মেয়েটির চোখে এক ঝলক বিস্ময়ের ছাপ।

"তুমি কি কখনো এমন কিছু অনুভব করেছো যা বলার মতো নয়?" আমেরিনের কণ্ঠ ছিল শান্ত কিন্তু গভীর।

রিফাত তার দিকে তাকিয়ে বোঝার চেষ্টা করলো, কিন্তু আমেরিন হঠাৎ করেই উঠে দাঁড়িয়ে চলে গেল। তার ছায়া যেন বাতাসে মিলিয়ে গেলো, অথচ বাতাসে কোনো দোলা ছিল না।

তৃতীয় অধ্যায়: অতীতের দরজা

রিফাত আমেরিনের অতীত খুঁজতে শুরু করলো। সে জানলো, আমেরিনের পরিবার এক অজ্ঞাত কারণে এই শহর ছেড়ে চলে গিয়েছিল বহু বছর আগে। তবে এক রাত, যখন শহরের এক পুরনো ভিলায় আগুন লেগেছিল, তখন একটি মেয়ে নিখোঁজ হয়েছিল। মেয়েটির নামও ছিল আমেরিন পেম!

তাহলে কি সে কোনো অলৌকিক সত্তা? নাকি একটি মৃত অতীতের জীবন্ত স্মৃতি?

চতুর্থ অধ্যায়: প্রেমের উন্মোচন

রিফাত ধীরে ধীরে আমেরিনের কাছাকাছি যেতে থাকলো। তার হৃদয় কাঁপতো, কারণ সে বুঝতে পারছিল—এই রহস্যময় মেয়েটির প্রতি তার এক অদ্ভুত টান জন্ম নিচ্ছে।

এক রাতে, তারা দুজনই গ্রন্থাগারে একসাথে বসে ছিল। হঠাৎই, চারপাশের বাতি নিভে গেল। চারদিকে কালো অন্ধকার, আর তার মাঝখানে আমেরিনের হাতে এক পুরনো চিঠি।

"এটাই আমার গল্পের শেষ অধ্যায়," আমেরিন ধীরে ধীরে বললো। "আমাকে খুঁজে পেয়েছো, কিন্তু হারিয়ে ফেলবে।"

রিফাত হতবাক। "তুমি কি বলছো? আমি তোমাকে হারাতে চাই না!"

আমেরিন হাসলো, কিন্তু সেই হাসির মধ্যে ছিল অপার বিষাদ। "কখনো কখনো, কিছু সম্পর্ক সময়ের চেয়ে বেশি পুরনো হয়। আমরা তেমনই এক গল্পের চরিত্র, রিফাত।"

পঞ্চম অধ্যায়: অমর ভালোবাসা

রিফাত আমেরিনের দিকে এগিয়ে গেল, কিন্তু হঠাৎই বাতাসে এক শীতল অনুভূতি। আমেরিনের শরীর ধীরে ধীরে ছায়ার মতো মিলিয়ে যেতে লাগলো।

"তুমি কি বাস্তব নও?" রিফাত চিৎকার করে উঠলো।

আমেরিনের চোখ ভিজে গেলো। "ভালোবাসা বাস্তব, কিন্তু আমি শুধু এক স্মৃতি। এক হারিয়ে যাওয়া অতীতের অংশ। তোমার হৃদয়ে আমি থাকবো, কিন্তু কখনো তোমার হাতে ধরা দেবো না।"

এক মুহূর্তের জন্য সময় যেন থমকে গেলো। রিফাত দেখতে পেল, আমেরিন একটি ছায়ায় রূপান্তরিত হয়ে মিলিয়ে যাচ্ছে চাঁদের আলোয়।

ষষ্ঠ অধ্যায়: নতুন রহস্যের সূচনা

সেদিনের পর থেকে, রিফাত আর কখনো আমেরিন পেমকে দেখেনি। তবে প্রতিদিন, সন্ধ্যা সাতটায়, সে সেই পুরনো গ্রন্থাগারে গিয়ে বসে। যেন অপেক্ষা করছে এক হারিয়ে যাওয়া প্রেমের জন্য, এক রহস্যের জন্য যা কখনোই পুরোপুরি সমাধান হবে না।

কিন্তু একদিন, হঠাৎ করেই রিফাতের সামনে একটি পুরনো বই এসে পড়লো, যেটির শেষ পাতায় লেখা ছিল—

“আমি ফিরে আসবো।”

রিফাতের শিরদাঁড়া বেয়ে শীতল স্রোত নেমে গেল। তার সামনে দাঁড়িয়ে ছিল এক অপরিচিত তরুণী, যার চেহারায় এক অদ্ভুত মিল ছিল আমেরিনের সঙ্গে।

রহস্য কি শেষ হয়েছে? নাকি এটি কেবল শুরু?

সপ্তম অধ্যায়: পুনর্জন্মের ইঙ্গিত

রিফাত ধীরে ধীরে মেয়েটির দিকে এগিয়ে গেল। "তুমি... তুমি কে?"

মেয়েটি মৃদু হাসলো। "আমি সেই, যার অপেক্ষায় তুমি ছিলে।"

রিফাতের হৃদয় প্রচণ্ডভাবে কাঁপছিল। এটি কি শুধুই কাকতালীয়? নাকি আমেরিন সত্যিই ফিরে এসেছে?

মেয়েটির হাতে ছিল একটি নীল পাথরের লকেট—একই লকেট, যা রিফাত একসময় আমেরিনের গলায় দেখেছিল!

অষ্টম অধ্যায়: শেষ না হওয়া গল্প

রিফাত এই রহস্যের গভীরে প্রবেশ করার সিদ্ধান্ত নিলো। সে জানতো, উত্তর খুঁজতে হলে তাকে আমেরিনের অতীতের সেই ভয়ংকর রাতে ফিরে যেতে হবে, যেখানে সবকিছুর শুরু হয়েছিল।

এক রাত, সে পুরনো ভিলার ধ্বংসাবশেষের কাছে গেল। সেখানে, ধূলোমাখা এক পুরনো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে সে দেখতে পেল—নিজের প্রতিবিম্বের পাশে দাঁড়িয়ে আছে আমেরিন!

"তুমি কি সত্যিই ফিরে এসেছো?" রিফাত কাঁপা কণ্ঠে প্রশ্ন করলো।

আমেরিনের প্রতিবিম্ব ধীরে ধীরে হাসলো, কিন্তু তার চোখে ছিল এক অদ্ভুত দৃষ্টি। "আমি কখনোই হারিয়ে যাইনি, রিফাত। শুধু সময়ের আবর্তে হারিয়ে গিয়েছিলাম। এবার সত্যিটা জানার পালা।"

নবম অধ্যায়: শেষের শুরু

রিফাত বুঝতে পারলো, সব উত্তর তার সামনে আছে। কিন্তু সত্য জানার জন্য তাকে আরেকটি পথ বেছে নিতে হবে—যে পথে হয়তো তার নিজের অস্তিত্বও হারিয়ে যেতে পারে।

রাতের আকাশে পূর্ণিমার আলো ঠিকরে পড়লো, আর রিফাত অনুভব করলো, এই রহস্যের শেষ হতে চলেছে। অথবা, হয়তো এটি কেবল শুরু...

মন্তব্যসমূহ