বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
স্মৃতির আকাশে এক ফোঁটা বৃষ্টি
স্মৃতির আকাশে এক ফোঁটা বৃষ্টি
প্রথম অধ্যায়: প্রথম দেখা
রাজধানীর ব্যস্ত রাস্তা। ট্রাফিক জ্যামে আটকে আছে হাজারো মানুষ। অফিস ফেরত জনতার ভিড়ে, বাসের জানালার পাশে বসে বাইরে তাকিয়ে ছিল অরণ্য। হঠাৎ করেই সে দেখল, ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা এক মেয়েকে—লাল রঙের সালোয়ার-কামিজ, মাথায় ওড়না, হাতে পুরোনো একটা বই। যেন একটা আলাদা জগতে আছে সে।
অরণ্য তখনই জানত না, এই মেয়েটিই একদিন তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় হয়ে উঠবে।
পরদিন, ক্যাম্পাসে ক্লাসে বসে থাকতে থাকতে হঠাৎ করেই সেই মেয়েটিকে আবার দেখতে পেল। এবার কাছ থেকে।
“হ্যালো, আমি অরণ্য।”
মেয়েটি কিছুক্ষণ চুপ করে থাকল, তারপর মৃদু হাসল। “আমি তৃষা।”
এই প্রথম দেখা, এই প্রথম আলাপ।
দ্বিতীয় অধ্যায়: বন্ধুত্বের শুরু
অরণ্য ও তৃষার বন্ধুত্ব দ্রুত গভীর হতে লাগল। তারা একসাথে ক্লাস করত, লাইব্রেরিতে বসে বই পড়ত, টিএসসিতে চা খেত, আর রাতে ফোনে ঘণ্টার পর ঘণ্টা কথা বলত। তৃষার চোখের চাহনি, তার হাসি—সবকিছুই যেন অরণ্যের মনে দাগ কেটে যাচ্ছিল।
একদিন বিকেলে, তারা বৃষ্টির মধ্যে ক্যাম্পাসের পথ ধরে হাঁটছিল।
“তোমার প্রিয় ঋতু কী?” অরণ্য জানতে চাইল।
“বসন্ত, কারণ তখন নতুন কিছু শুরু হয়।”
অরণ্য মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকল। হয়তো তাদের সম্পর্কের নতুন কিছু শুরু হতে চলেছে।
তৃতীয় অধ্যায়: প্রেমের স্বীকারোক্তি
সময় গড়াতে লাগল। বন্ধুত্বের মাঝেই এক অদ্ভুত ভালোবাসা জন্ম নিচ্ছিল। এক রাতে, হাতিরঝিলের ধারে দাঁড়িয়ে অরণ্য অবশেষে বলে ফেলল, “তৃষা, আমি তোমাকে ভালোবাসি।”
তৃষা কিছু বলল না। কিছুক্ষণ চুপ থেকে বলল, “ভালোবাসা সহজ নয়, অরণ্য। তুমি কি সত্যিই জানো তুমি কী চাও?”
অরণ্য নিশ্চিত ছিল। “আমি জানি, আমি শুধু তোমাকে চাই।”
তৃষা হেসে ফেলল। “আমরা কি বন্ধু থাকলেই ভালো হতো না?”
কিন্তু বন্ধুত্বের গণ্ডি তারা ইতোমধ্যেই পেরিয়ে এসেছে।
চতুর্থ অধ্যায়: বাস্তবতার ধাক্কা
ভালোবাসার পথ কখনো মসৃণ হয় না। তৃষার পরিবার তার জন্য ইতোমধ্যেই অন্য একজনকে পছন্দ করে রেখেছিল।
“তুমি জানো, আমার বাবা-মা চায় আমি তাদের পছন্দের ছেলের সঙ্গে বিয়ে করি।”
অরণ্যের মন ভেঙে গেল। সে জানত, তাদের সম্পর্কটা সহজ হবে না।
তৃষা তার ভালোবাসা অস্বীকার করেনি, কিন্তু সামাজিক বাস্তবতার দেয়াল ছিল তাদের মাঝে।
পঞ্চম অধ্যায়: আলাদা পথ
তৃষার বিয়ের দিন ঠিক হয়ে গেল। অরণ্য একা বসে থাকল সেই বেঞ্চে, যেখানে তারা একসাথে বসত।
তৃষা চলে গেল, সংসারের দায়িত্ব নিল। আর অরণ্য? সে নিজেকে ব্যস্ত রাখল কাজের মাঝে।
তাদের আর দেখা হয়নি, কিন্তু অরণ্যের মনে সবসময় রয়ে গেছে এক ফোঁটা বৃষ্টি—তৃষার মতো, মিষ্টি আর অল্প বিষাদের ছোঁয়া নিয়ে।
ষষ্ঠ অধ্যায়: পুরনো স্মৃতির ছোঁয়া
বছর কেটে গেছে। অরণ্য এখন বড় একটি প্রতিষ্ঠানের চাকুরে। কিন্তু অতীত তাকে ছেড়ে যায়নি। তার অফিসের ডেস্কে এখনো তৃষার দেয়া পুরনো একটা বুকমার্ক পড়ে আছে।
একদিন ফেসবুকে তৃষার প্রোফাইল খুঁজে পেল সে। তার ছবির নিচে কমেন্টের ভিড়, স্বামী-সন্তানের সাথে হাসিমুখের ছবি। অরণ্য হেসে ফেলল, হয়তো একটুখানি বিষাদের ছোঁয়া নিয়েই।
“ভালো আছ তো, তৃষা?” নিজেকেই প্রশ্ন করল সে।
তৃষা কি এখনো মাঝে মাঝে অরণ্যের কথা ভাবে? এই প্রশ্নের উত্তর হয়তো কেউ জানে না।
শেষ অধ্যায়: ভালোবাসার রূপ
ভালোবাসা কখনো শেষ হয়ে যায় না, শুধু সময়ের সাথে তার রূপ বদলে যায়। তৃষা ও অরণ্যের গল্পটাও তেমনই। তারা একসঙ্গে পথ চলতে পারেনি, কিন্তু তাদের হৃদয়ের এক কোণায় কেউ না কেউ আজও রয়ে গেছে।
একদিন, শীতে ঘেরা সকালে অরণ্য অফিসে যাওয়ার পথে হঠাৎ করেই রাস্তার পাশে ফুটপাতে দাঁড়িয়ে থাকা একটি মেয়েকে দেখল। তার হাতে পুরোনো একটা বই, মাথায় ওড়না।
অরণ্যের মনে পড়ল তৃষার কথা।
সময় থেমে থাকে না, কিন্তু কিছু স্মৃতি হৃদয়ে রয়ে যায় চিরকাল।
ভালোবাসা হারিয়ে যায় না, শুধু সময়ের সাথে বদলে যায়।
জনপ্রিয় পোস্টসমূহ
নিজের ব্লগে ই-কমার্স ফিচার যুক্ত করার উপায় (প্রোডাক্ট বিক্রি করুন সরাসরি ব্লগ থেকেই)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
Google Sites দিয়ে ফ্রি ওয়েবসাইট বানিয়ে ইনকাম করুন (Step by Step বাংলা গাইড ২০২৫)
- লিঙ্ক পান
- X
- ইমেল
- অন্যান্য অ্যাপ
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন