সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

https://dmmsoftware.top/

Please visit : https://dmmsoftware.top/ 

শ্রাবণের বৃষ্টি আর মফিজের প্রেম

 শ্রাবণের বৃষ্টি আর মফিজের প্রেম

পর্ব ১: প্রেমের আগমন

মফিজ একজন সাদাসিধা যুবক, যার জীবনটা মোটামুটি চারটা জিনিসের মধ্যে আবদ্ধ – ঘুম, খাওয়া, চা আর দোকানের কাজ। সে তার বাবার ছোট্ট মুদি দোকানে বসে বাকি খাতার হিসাব রাখে, কিন্তু তার মন পড়ে থাকে দোকানের সামনের রাস্তায়, যেখানে প্রতিদিন এক অপূর্ব দৃশ্য দেখা যায় – রূপার আগমন।

রূপা, এলাকার সবচেয়ে চঞ্চল আর বুদ্ধিমতী মেয়ে, যার হাঁটাচলা মানেই যেন হালকা ঝড়ো হাওয়া। সে যখন পাশ দিয়ে যায়, মফিজের মনে হয়, পৃথিবীর সমস্ত কিছু থেমে গেছে, শুধু রূপার কানের দুল দুটো দুলছে।

পর্ব ২: ভুল বোঝাবুঝি

একদিন মফিজ সিদ্ধান্ত নিল সে রূপাকে ভালোবাসার কথা বলবে। কিন্তু কীভাবে বলবে? ফেসবুকে মেসেজ পাঠাবে? একটা চিঠি লিখে দিবে? নাকি দোকানের চায়ের কাপে লিখে দিবে ‘I Love You’?

শেষমেশ সে সিদ্ধান্ত নিল সরাসরি বলবে। কিন্তু বিধি বাম! রূপার এক কাজিন ঠিক তখনই এসে হাজির হলো।

  • “ভাই, এক কাপ চা দাও তো!”

  • “ভাই? আমি তো ওর প্রেমিক হতে চাই!” মনে মনে বলে মফিজ। কিন্তু মুখে বলে, “এই নেন ভাই।”

রূপা কিছু বোঝার আগেই চলে গেল, আর মফিজ মনে মনে আফসোস করতে থাকল।

পর্ব ৩: বৃষ্টিতে ধরা

একদিন শ্রাবণের বিকেলে বৃষ্টি এল। পুরো এলাকা যখন ছাতা নিয়ে ছুটছে, তখন রূপা এক কোণে দাঁড়িয়ে কাঁপছে। মফিজ সুযোগ বুঝে তার দোকান থেকে একটা বড় ছাতা নিয়ে গিয়ে রূপার পাশে দাঁড়াল।

  • “ছাতা নিবেন?”

  • “আপনার ছাতার নিচে থাকলে কি ফ্রি?”

  • “না, কিন্তু প্রেমটা ফ্রি!”

রূপা অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল, আর মফিজ বুঝতে পারল, সে আবার বিপদে পড়েছে।

পর্ব ৪: প্রেমের ছাতা

এরপর দিন যেতে লাগল। মফিজ আর রূপার বন্ধুত্ব জমে উঠল। একদিন রূপা নিজেই দোকানে এসে বলল,

  • “আপনার দোকানে কি প্রেম বিক্রি হয়?”

  • “না, কিন্তু এক কাপ চায়ের সাথে ফ্রি!”

রূপা হেসে উঠল, আর সেই হাসির মধ্যে মফিজের প্রেম সত্যি হয়ে গেল।

পর্ব ৫: প্রতিযোগী প্রবেশ করে

সবকিছু ঠিকঠাকই চলছিল, কিন্তু হঠাৎ একদিন গ্রামের নতুন হ্যান্ডসাম ছেলে তুহিন এসে হাজির। শহর থেকে আসা এই তুহিন সুদর্শন, স্মার্ট, আর আধুনিক। রূপার বাবা-মা এই ছেলেকে পছন্দ করতে শুরু করলেন। মফিজের দোকানে বসে তুহিন যখন রূপার সাথে গল্প করছিল, তখন মফিজের ভেতরটা কেমন যেন ছ্যাঁৎ করে উঠল।

  • “তুহিন ভাই, চা খাবেন?”

  • “হুম, স্পেশাল মালাই চা দেন। আর শোনেন, এই এলাকাটা কেমন? আমার তো ভালোই লাগছে।”

মফিজ কিছু বলতে গিয়েও চুপ করে গেল। সে বুঝতে পারছিল, তার প্রেমে বড়সড় প্রতিদ্বন্দ্বী চলে এসেছে।

পর্ব ৬: প্রেমের জন্য লড়াই

মফিজ হাল ছাড়ার পাত্র নয়। সে বুঝতে পারল, প্রেম শুধু চোখের ভাষায় বোঝানো যায় না, কাজেও প্রমাণ দিতে হয়। সে এবার সরাসরি রূপার সামনে নিজের ভালোবাসার কথা বলার সিদ্ধান্ত নিল।

একদিন সকালে রূপা যখন বাজারে এসেছে, তখন মফিজ তার সামনে গিয়ে দাঁড়াল।

  • “রূপা, তোমার সাথে একটা জরুরি কথা ছিল।”

  • “কী কথা?”

  • “আমি তোমাকে ভালোবাসি!”

রূপা এক মুহূর্তের জন্য স্তব্ধ হয়ে গেল। তারপর হেসে বলল,

  • “তুমি এত দেরিতে বললে কেন?”

মফিজ অবাক হয়ে গেল। রূপা হেসে যোগ করল,

  • “আমি অপেক্ষায় ছিলাম, কবে তুমি বলবে!”

পর্ব ৭: হ্যাপি এন্ডিং

শেষ পর্যন্ত, মফিজ আর রূপার প্রেম পরিণতি পেল। গ্রামের সবাই তাদের প্রেম নিয়ে মজা করতে লাগল, আর মফিজের দোকানের চা আরও বেশি জনপ্রিয় হয়ে উঠল। তুহিনও হার মেনে ফিরে গেল শহরে।

রূপা আর মফিজের গল্প হলো এক চায়ের দোকান থেকে শুরু হওয়া, বৃষ্টিতে প্রেম জমে ওঠা, আর কঠিন সময় পার করে সত্যিকারের ভালোবাসায় পৌঁছানোর এক মজার উপাখ্যান।

মন্তব্যসমূহ