সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

https://dmmsoftware.top/

Please visit : https://dmmsoftware.top/ 

অফিসের প্রেম ও বিপদের ঘণ্টা

 শিরোনাম: অফিসের প্রেম ও বিপদের ঘণ্টা

ভূমিকা

সাধারণ অফিস জীবনে প্রেমের গল্প কখনো কখনো হাস্যকর মোড় নেয়, বিশেষ করে যখন সেই প্রেমিক একটু অদ্ভুত হয়! এমনই এক কাহিনি আমাদের নায়ক আরিফের, যে অফিসের সবচেয়ে চুপচাপ, কর্মঠ, কিন্তু প্রেমের ব্যাপারে একদমই কাঁচা।

পরিচিতি

আরিফ: সদ্য জয়েন করা জুনিয়র এক্সিকিউটিভ। সে ভেবেছিল, অফিস মানেই শুধু কাজ, বসের বকা, আর চা-বিস্কুট। কিন্তু বাস্তবে অফিস আরও অনেক কিছু, বিশেষ করে যখন প্রেম আসে সামনে।

তৃষা: স্মার্ট, আত্মবিশ্বাসী, আরিফের সিনিয়র। সবার প্রিয়, তবে একটু বেশি কথা বলে।

সামাদ ভাই: অফিসের পুরনো কর্মী, সবার অভিভাবক।

বস (মিঃ কামাল): সবসময় সিরিয়াস, কড়া স্বভাবের মানুষ। তবে তার মধ্যেও এক অদ্ভুত রসবোধ লুকিয়ে আছে।

গল্পের শুরু

একদিন অফিসে বসের সামনে একটা রিপোর্ট দিতে গিয়ে আরিফ এতটাই নার্ভাস হয়ে গেল যে, ভুল করে রিপোর্টের বদলে তার কলেজের প্রেমপত্র জমা দিয়ে দিল! বস চোখ কুঁচকে বললেন, "আরিফ, এটা কি?"

তৃষা পাশে দাঁড়িয়ে ছিল, হাসি চেপে রাখতে পারছিল না। "বস, মনে হয় আরিফ ভাই আমাদের অফিসে নতুন একটা ডিপার্টমেন্ট খুলতে চায়—রোমান্স ডিপার্টমেন্ট!"

প্রেমের ভুল বোঝাবুঝি

এই ঘটনাটার পর থেকেই অফিসে গুজব ছড়িয়ে গেল, আরিফ নাকি তৃষাকে লাইক করে! আর তৃষাও সেটা খুব উপভোগ করছিল। কিন্তু আসল বিপদ হলো যখন সামাদ ভাই এটা শুনে আরিফকে পটানোর টিপস দিতে লাগলেন।

"দেখো আরিফ, মেয়েরা কিন্তু স্মার্ট ছেলেদের পছন্দ করে। তুমি কাল থেকে একটু স্টাইল করে আসো, বুঝলা?"

পরদিন আরিফ এল এক নতুন রূপে—চশমা ফেলে দিয়ে, নতুন হেয়ারস্টাইল করে। কিন্তু সমস্যা হলো, এত চুলের স্প্রে লাগিয়ে ফেলেছিল যে অফিসের এসি চালু হতেই তার চুল একদিকে উড়ে গিয়ে বসের মুখে লেগে গেল!

অফিস ট্রিপ ও কাণ্ড

অফিস থেকে সবাই কক্সবাজার ট্রিপে গেল। ট্রিপের প্রথম দিনেই আরিফের অবস্থা খারাপ! সে ভুল করে তৃষার লাগেজ নিয়ে নিজের রুমে চলে আসে।

তৃষা রেগে গিয়ে বলল, "আরিফ ভাই, আমার জামাকাপড় আপনার কাছে কেন? নাকি নতুন ফ্যাশন ট্রাই করতে চান?"

আরিফ লজ্জায় লাল হয়ে বলল, "আমি... মানে... ভুল করে নিয়ে এসেছি!"

সবাই হেসে উঠল। আর এর মধ্যেই সামাদ ভাই এসে বলল, "আরিফ, এই সুযোগ কাজে লাগা! মেয়েরা এইসব ছোট ছোট ভুল গুলাকে কিউট ভাবে!"

পরদিন সকালে সবাই বিচে ঘুরতে গেল। হঠাৎ করে তৃষা পানিতে নেমে ভয় পেয়ে গেল, কারণ সে সাঁতার জানত না। আরিফ কিছু বুঝে ওঠার আগেই সে পানিতে ঝাঁপ দিল। কিন্তু সমস্যাটা হলো, আরিফও সাঁতার জানত না! ফলে দুজনেই হাবুডুবু খেতে লাগল। শেষমেশ লাইফগার্ড এসে দুজনকে টেনে তুলল।

তৃষা কাশতে কাশতে বলল, "আপনি সাঁতার জানেন না, তাহলে লাফ দিলেন কেন?"

আরিফ বলল, "জানি না, কিন্তু তোমাকে বাঁচানোর জন্য কিছু তো করতে হতো!"

এই কথাটা শুনে তৃষার চোখ কেমন যেন নরম হয়ে গেল।

ক্লাইম্যাক্স

তৃষা আরিফের এই হাস্যকর চেষ্টাগুলো উপভোগ করছিল, কিন্তু বুঝতে পারছিল না যে সে নিজেও আস্তে আস্তে আরিফকে পছন্দ করতে শুরু করেছে।

অফিসে ফেরার পর, একদিন আরিফ নিজের ডেস্কে ব্যস্ত ছিল, তখন তৃষা এসে বলল, "আরিফ, তুমি কি জানো তুমি খুব ইন্টারেস্টিং?"

আরিফ অবাক হয়ে বলল, "সত্যি?"

তৃষা হেসে বলল, "হ্যাঁ, কারণ তুমি এত কিছু করো, অথচ আমি কখনোই তোমাকে বিরক্ত হতে দেখিনি।" এই প্রথমবার তৃষা সরাসরি আরিফের প্রশংসা করল।

সমাপ্তি

শেষমেশ আরিফ বুঝতে পারে, প্রেম মানেই শুধু ফুল, গান, আর চিঠি নয়। কখনো কখনো প্রেমের আসল সৌন্দর্য লুকিয়ে থাকে ছোট ছোট মজার মুহূর্তগুলোর মধ্যেই।

কয়েকদিন পর, পুরো অফিস হতবাক হয়ে গেল যখন দেখল তৃষা আরিফকে ক্যান্টিনে বসে চা খাওয়াচ্ছে। আর সামাদ ভাই দূর থেকে চিৎকার করে বললেন, "আরিফরে! মিশন সফল!"

এভাবেই শুরু হয় তাদের নতুন অধ্যায়—অফিসের ডেস্কের মাঝে, রিপোর্টের নিচে লুকিয়ে থাকা এক ছোট্ট প্রেমের গল্প।

মন্তব্যসমূহ