সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বৈশিষ্ট্যযুক্ত পোস্ট

https://dmmsoftware.top/

Please visit : https://dmmsoftware.top/ 

 হারানো প্রেমের আগুন

অধ্যায় ১: স্মৃতির ছায়া

রাতের আকাশে চাঁদের আলো ম্লান হয়ে এসেছে, যেন প্রকৃতি নিজেই কোনো পুরনো স্মৃতি ভুলতে চাইছে। ফারিয়ানের চোখে ঘুম নেই। সে ব্যালকনিতে দাঁড়িয়ে এক কাপ কফি হাতে ভেসে যাচ্ছিলো পুরনো দিনগুলোর স্মৃতিতে। চার বছর আগে এই রাতেই সে প্রতিজ্ঞা করেছিলো, জীবনে আর কখনো পেছনে ফিরে তাকাবে না। কিন্তু মানুষের মন কি এত সহজেই প্রতিজ্ঞার শৃঙ্খলে আবদ্ধ থাকে?

তিশার কথা মনে পড়লেই তার হৃদয়ে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলে ওঠে। সেই আগুন যা প্রেমের, যা প্রতিশোধের। ভালোবাসা আর ঘৃণার মাঝের এই সূক্ষ্ম রেখাটা যেন তার হৃদয়ে এক শাশ্বত ক্ষত তৈরি করেছে।

অধ্যায় ২: প্রেমের উজ্জ্বল শিখা

চার বছর আগের সেই বসন্তের দিনগুলো ছিলো রঙিন। তিশার হাসি ছিলো ফারিয়ানের জীবনের সবচেয়ে বড় আশ্রয়। তারা একসঙ্গে স্বপ্ন দেখত, একসঙ্গে ভবিষ্যতের গল্প বুনতো। ফারিয়ান মনে করতো, পৃথিবীর কোনো শক্তিই তাদের আলাদা করতে পারবে না।

কিন্তু বাস্তবতা বড় নির্মম। ভালোবাসা থাকলেই সম্পর্ক টিকে থাকে না। কিছু ভুল বোঝাবুঝি, কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতি, আর তৃতীয় কোনো অজানা হাত এসে তাদের স্বপ্ন ভেঙে চুরমার করেছিলো।

তিশা একদিন হুট করে চলে গেলো, কোনো ব্যাখ্যা না দিয়েই। ফারিয়ান হাজারবার জানার চেষ্টা করেছিলো, কিন্তু কোনো উত্তর সে পায়নি। সে বুঝতে পারেনি, ভালোবাসা এত নিষ্ঠুর হয় কীভাবে?

অধ্যায় ৩: প্রতিশোধের আগুন

সময় বদলেছে, কিন্তু ফারিয়ান বদলায়নি। সে আজও সেই আগুন বুকে নিয়ে বেঁচে আছে। সে আজ সফল ব্যবসায়ী, সমাজের উচ্চস্থানে তার অবস্থান। কিন্তু সে জানে, তার হৃদয়ের শূন্যতা কিছুতেই পূরণ হবে না।

একদিন হঠাৎ করেই সে খবরে জানতে পারে, তিশা ফিরে এসেছে শহরে। ফারিয়ানের মনে আবার আগুন জ্বলে ওঠে। সে সিদ্ধান্ত নেয়, এবার সে জবাব আদায় করবেই।

অধ্যায় ৪: পুনর্মিলন নাকি নতুন যুদ্ধ?

ফারিয়ান এক সন্ধ্যায় তিশার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। সে দেখে, তিশা অনেক বদলে গেছে। তার চোখে সেই পুরনো উজ্জ্বলতা নেই। ফারিয়ান বুঝতে পারে, তিশার হৃদয়ে লুকিয়ে আছে কোনো গভীর কষ্ট।

'তুমি কেন চলে গিয়েছিলে?' ফারিয়ান জিজ্ঞেস করে।

তিশা কিছুক্ষণ চুপ করে থাকে, তারপর নরম গলায় বলে, 'আমি চাইনি চলে যেতে, কিন্তু আমার কোনো উপায় ছিলো না।'

'কী উপায় ছিল না?'

'তোমার শত্রুরা আমাকে বাধ্য করেছিলো। যদি আমি না যেতাম, তোমার জীবন ধ্বংস হয়ে যেতো।' তিশার চোখে জল জমে ওঠে।

ফারিয়ান হতবাক হয়ে যায়। এতদিন ধরে সে যে ঘৃণা পুষে রেখেছিলো, তার ভিত্তি ছিলো মিথ্যা! সে বুঝতে পারে, ভালোবাসা কখনোই তার জীবন থেকে চলে যায়নি, শুধু কষ্টের ধুলো জমে ছিলো তার ওপর।

অধ্যায় ৫: আগুনের পুনর্জন্ম

তাদের দুজনের মধ্যে অন্ধকারের যে দেয়াল ছিলো, তা ধীরে ধীরে গলে যেতে থাকে। ফারিয়ান বুঝতে পারে, প্রতিশোধের আগুন আসলে তার হৃদয়ের সত্যিকারের অনুভূতিকে ঢেকে রেখেছিলো।

তিশা ফারিয়ানের হাত ধরে বলে, 'আমরা কি নতুন করে শুরু করতে পারি?'

ফারিয়ান উত্তর দেয় না, শুধু তিশার হাত শক্ত করে ধরে। এই আগুন এবার ধ্বংস নয়, আলো হয়ে তাদের পথ দেখাবে।


শেষ কথা: জীবনে অনেক সময় আমরা এমন কিছু ভুল বোঝাবুঝির শিকার হই যা আমাদের প্রিয়জনকে দূরে সরিয়ে দেয়। কিন্তু যদি সত্যিকার ভালোবাসা থাকে, তবে একদিন না একদিন সেই ভালোবাসা ফিরে আসবেই, ঠিক আগুনের মতন, যা ছাই থেকে পুনরায় জ্বলতে শেখে।

মন্তব্যসমূহ